নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) বরিশাল বিভাগের মোটরযান পরিদর্শক সৌরভ কুমার সাহা একজন সাধারণ হকার পরিবারের সন্তান থেকে মাত্র ১১ বছরে অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন—এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার সম্পদের উৎস ঘুষবাণিজ্য, অবৈধ যানবাহন রেজিস্ট্রেশন ও রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহার। ২০১৪ সালে নোয়াখালী অফিসে মেকানিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি শুরু করেন সৌরভ। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুপারিশে দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে ২০২৩ সালে বরিশালে মোটরযান পরিদর্শক হন। মাত্র ২৬-২৭ হাজার টাকার বেতনে তিনি ঢাকাসহ বরিশাল ও ফরিদপুরে ১০টি বাস, ৪টি প্রাইভেট কার, আধুনিক ভবন ও জমিসহ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় প্রতি ফাইলের বিপরীতে দালালদের মাধ্যমে তিনি মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করেন। শুধু গত বছরই ১৯১টি সিএনজি রেজিস্ট্রেশন অনুমোদনের আগে প্রতিটিতে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া বরিশাল বিআরটিএ অফিসে আমদানি ছাড়াই ২০০টির বেশি থ্রি-হুইলার (বাজাজ বিআর এলপিজি মডেল) জাল কাগজে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। এসব গাড়ির নম্বর বরিশাল মেট্রো-থ-১১-১৯৩০ থেকে ১১-২১৪৬ পর্যন্ত। এতে সরকারের কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় সৌরভ ছাড়া বিআরটিএ এর বেশ কয়েকজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তারও নাম উঠে এসেছে। এছাড়া সৌরভের পরিবারের রাজনৈতিক যোগসূত্রও আলোচনায়। তার মা কৃষ্ণা রানী সাহা ফরিদপুর পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। পরিবারের এই রাজনৈতিক পরিচয়ই সৌরভের দ্রুত পদোন্নতি ও প্রভাব বিস্তারে সহায়ক হয়েছে বলে অভিযোগ। বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। তবে স্থানীয়ভাবে তাকে এখনো দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। সচেতন মহলের প্রশ্ন—এমন প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা যদি শাস্তি এড়ায়, তাহলে বিআরটিএর স্বচ্ছতা ও সড়ক নিরাপত্তা কোথায় দাঁড়াবে?জনগণের প্রত্যাশা, এই তদন্তের মাধ্যমে সৌরভ কুমার সাহার অবৈধ সম্পদ ও দুর্নীতির পূর্ণচিত্র প্রকাশ পাবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
https://slotbet.online/