নিয়াজ শেখ: লাতিন আমেরিকার জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের খবর ঘিরে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পাল্টা অবস্থান নিতে গিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ঘোষণা দিয়েছেন, সারা দেশে ৪৫ লাখ মিলিশিয়া সদস্য প্রস্তুত রাখা হবে।
কোনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চাইলেই ভেনেজুয়েলার পবিত্র মাটির দিকে হাত বাড়াতে পারবে না। এই সপ্তাহে বিশেষ পরিকল্পনা কার্যকর হবে। সারা দেশে ৪৫ লাখেরও বেশি প্রশিক্ষিত, সংগঠিত ও সশস্ত্র মিলিশিয়া প্রস্তুত থাকবে।” প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিশ্চিত করে জানায়, মাদক পাচার রোধের অংশ হিসেবে তারা লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে সম্ভাব্য নৌ-অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, তিনটি মার্কিন নৌবিধ্বংসী জাহাজ ও প্রায় চার হাজার সেনা ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে অবস্থান নিতে যাচ্ছে। তবে ১৯ আগস্ট মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান—
“বর্তমানে কোনো জাহাজ ভেনেজুয়েলা উপকূলে নেই এবং সেখানে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়নি।”
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে মাদকের হুমকি থেকে রক্ষায় সব ধরনের শক্তি প্রয়োগে প্রস্তুত। একইসঙ্গে তিনি মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মানতে অস্বীকার করেন।
২০১৯ সাল থেকে ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোর গ্রেপ্তারে তথ্য দিলে পুরস্কার দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫ কোটি ডলার ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র তাকে “কার্টেল অব দ্য সানস”-এর প্রধান এবং বিশ্বের অন্যতম বড় মাদক কারবারি হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। তবে ভেনেজুয়েলা সরকার এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে নাকচ করেছে।
ভেনেজুয়েলার আলোচিত মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে তোলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ ২০০৫ সালে। ২০১০ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অংশ হয়। বর্তমানে ভেনেজুয়েলার সশস্ত্র বাহিনীতে সক্রিয় সদস্য আছেন প্রায় এক লাখ, আর মিলিশিয়ায় রয়েছে কয়েক মিলিয়ন। যাদের অধিকাংশই কৃষক ও শ্রমিক।
আন্তর্জাতিক সামরিক শক্তি বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার-এর ২০২৫ সালের র্যাঙ্কিং অনুসারে, ১৪৫ দেশের মধ্যে ভেনেজুয়েলা আছে ৫০তম স্থানে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে, রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
🔴 বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক শক্তিতে ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকলেও, মিলিশিয়া বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে তারা অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছে। এতে লাতিন আমেরিকার ভূ-রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
https://slotbet.online/