অনলাইন ডেস্ক॥
ভারতের রাশিয়া থেকে খনিজ তেল কেনা থামাতে যুক্তরাষ্ট্র ফের কঠোর অবস্থান নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা কার্যকর হবে ২১ দিন পর থেকে। নতুন শুল্ক আরোপের ফলে বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্কহার দাঁড়াচ্ছে ৫০ শতাংশে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের জ্বালানি বাণিজ্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগেই হুঁশিয়ার করেছিলেন, “ইউক্রেনে রাশিয়ান অস্ত্রে কত মানুষ মারা যাচ্ছে তা ভারত আমলে নিচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “ভারত যদি রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করে, তাহলে আরও কঠোর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে, গত ৩১শে জুলাই যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশের ওপর নতুন শুল্কহার ঘোষণা করে, যেখানে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপরই নতুন নির্বাহী আদেশে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন, যা “সেকেন্ডারি শুল্ক” হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভারতের প্রতি মার্কিন কড়া বার্তা এমন সময় এলো, যখন ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, ৮ আগস্টের মধ্যে যদি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সম্মত না হয়, তবে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যরত দেশগুলোর ওপর আরও শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে।
রাশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত হলো তেল ও গ্যাস। ভারত, চীন ও তুরস্ক মস্কোর প্রধান ক্রেতা হিসেবে অবস্থান করছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করলেও ভারত বিপরীত পথে হাঁটছে। ২০২২ সাল থেকে ভারত রাশিয়ার তেলের অন্যতম বড় আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে।
ওদিকে ট্রাম্পের এই শুল্ক ঘোষণায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে ভারতকে নিশানা করা হলেও, ইউরোপ ও আমেরিকাও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে জাতীয় স্বার্থ ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় সব পদক্ষেপ নিতে বাধ্য।”
ভারত আরও জানায়, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত বছরে রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি ডলারের বাণিজ্য করেছে দেশটি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নতুন শুল্ক ব্যবস্থা ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উত্তেজনার মুখে ঠেলে দিচ্ছে। রাশিয়ার প্রতি ভারতের কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর চাপের এই সংঘাত আগামী দিনে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক মেরুকরণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
https://slotbet.online/