নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল রোগী সেবার মানউন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। টানা দুই সপ্তাহ ধরে চলমান ছাত্র জনতার আন্দোলন ও দাবির প্রেক্ষিতে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার (১০ আগস্ট) পরিচালক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব তথ্য জানান।
পরিচালকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে হাসপাতালের সব স্বেচ্ছাসেবী ট্রলি ম্যানকে বহিষ্কার করে সরকারি স্টাফদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন ৪৬ জন জনবল পাওয়ার পর ট্রলি সেবায় পরিবর্তন আনা হয়। পুরাতন সব ট্রলি মেরামত ও নতুন ট্রলি সংযোজনের পাশাপাশি সকাল, বিকাল ও রাতে হাসপাতালের বহিঃ ও অন্তঃ বিভাগ মনিটরিংয়ের জন্য ৭টি টিম গঠন করা হয়েছে।
অবকাঠামো ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা উন্নয়নে ১০০টি সিলিং ফ্যান স্থাপন, ৯০ জন হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্য নিয়োগ এবং ৮টি অটোমেটিক ক্লিনিং মেশিন চালু করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে আরও ১২টি মেশিন যুক্ত হবে। হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত রাখতে ২০টি স্প্রে মেশিন আনা হয়েছে। টয়লেট সংস্কার কাজ তিন দিনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া ১০০টি নতুন বেড স্থাপন, নষ্ট লিফট মেরামতের উদ্যোগ এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নয়নে নতুন যন্ত্রপাতির চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালের পরিবেশ উন্নয়নে দালাল, হকার, প্রতারক এবং বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিদের হাসপাতালে প্রবেশ রোধে পুলিশে হস্তান্তরের ব্যবস্থা চলছে। অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক স্টাফ সাময়িক বরখাস্ত এবং অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৪৬০ শয্যার ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে চালু হবে। বরিশাল শিশু হাসপাতালও ডিসেম্বরের মধ্যে হস্তান্তর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী এবং আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। জরুরি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি যেমন টেলিথেরাপি ও এমআরআই মেশিন সংযোজন এবং লিনেন প্লান্ট আধুনিকায়নও পরিকল্পনায় রয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতাল বর্তমানে দেড় কোটি মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল। ১৯৬৮ সালে ৫০০ শয্যার এই হাসপাতাল অবকাঠামোগত বড় উন্নয়ন না পেলেও প্রতিদিন গড়ে ৭০০ নতুন রোগী ভর্তি এবং ৩ হাজার বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসেন। স্বজনসহ প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের সমাগমে সেবা প্রদান করতে গিয়ে সীমিত জনবলকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, “অতিরিক্ত রোগীর চাপ ও সীমিত সম্পদের মধ্যেও সেবার মান উন্নয়নে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া পদক্ষেপগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে।”
https://slotbet.online/