ডেস্ক নিউজ : ঢাকা ৫ আগস্ট ২০২৪** – বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি এবং সরকারের অনির্দিষ্টকালের কারফিউয়ের মধ্যেই আজ রাজধানী ঢাকায় উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরে পুরো শহর জুড়ে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। গণভবন, সংসদ ভবন, আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে ।
**কারফিউ ভেঙে জনস্রোত, শেখ হাসিনার পলায়ন** সকাল থেকেই কারফিউ উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ ঢাকার দিকে যাত্রা শুরু করে। বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান লোকারণ্য হয়ে ওঠে। দুপুর দেড়টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি জানায়, তারা হেলিকপ্টারে করে গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে যান ।
**গণভবন ও সংসদ ভবনে জনতার স্রোত**শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গণভবনে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। নিরাপত্তাবাহিনী সরে যাওয়ায় ভবনটিতে ব্যাপক লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। গরু, মাছ, হাঁস-মুরগি, আসবাবপত্র, ফ্রিজ, এসিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। একইভাবে সংসদ ভবনেও আগুন দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয় ।
**বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সুধা সদন ও প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা**
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং সুধা সদনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিকালে প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও একই ধরনের হামলা চালানো হয়। দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর ও লুটপাটে মেতে ওঠেন।
**আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ**
ধানমন্ডির ৩/এ সড়কে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়, তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায়ও হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয় । *
*পুলিশ সদর দপ্তর ও বিমানবন্দরে অস্থিরতা**
গুলিস্তানে পুলিশ সদর দপ্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ভবনে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে । *
*সেনাপ্রধানের হস্তক্ষেপ ও অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা**
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “সব হত্যার বিচার হবে, শান্তি ফিরিয়ে আনা হবে” ।
আন্দোলনকারীরা এই দিনটিকে ‘৩৬ জুলাই’ নামে অভিহিত করে, যা স্বৈরশাসনের পতনের দিন হিসেবে ইতিহাসে স্থান পায় । আগস্ট ২০২৪ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চাপে শেখ হাসিনার পতন এবং পরবর্তী ১ বছরে নানা অরাজকতা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে কতটুকু নতুন দিশা দিতে সফল হয়েছে এমন প্রশ্ন রয়েই গেছে ওনেক সাধারন নাগরীকদের মনে।
https://slotbet.online/